Class 9 Life Science Taxonomy: নবম শ্রেণি জীবন বিজ্ঞান ট্যাক্সোনমি

নবম শ্রেণি : ট্যাক্সোনমি (Taxonomy)
পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের পাঠক্রম অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত উন্নত নোটস।
Class 9 Life Science Taxonomy: নবম শ্রেণি জীবন বিজ্ঞান ট্যাক্সোনমি

Class 9 Life Science Taxonomy: নবম শ্রেণি জীবন বিজ্ঞান ট্যাক্সোনমি

ট্যাক্সোনমি কী?

ট্যাক্সোনমি জীবজগতের বিভিন্ন প্রজাতির সনাক্তকরণ, শ্রেণিবিন্যাস এবং বিজ্ঞানসম্মত নামকরণের প্রক্রিয়া। এই শাখা আমাদের জীবদের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করে।

ট্যাক্সোনমির গুরুত্ব

  • জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন।
  • নতুন প্রজাতির সনাক্তকরণ।
  • জীবজগতের ক্রমানুসারে সম্পর্ক বোঝা।
  • গবেষণা ও সংরক্ষণে সহায়ক।

ট্যাক্সোনমির তিনটি প্রধান ধাপ

1. সনাক্তকরণ (Identification):
  • জীবের বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করে তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা।
  • উদাহরণ: গোলাপ গাছের কাঁটা এবং ফুলের ধরন দেখে এটি চেনা।
2. নামকরণ (Nomenclature):
  • জীবদের বিজ্ঞানসম্মত নাম দেওয়ার পদ্ধতি।
  • উদাহরণ: আমগাছের বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica
3. শ্রেণিবিন্যাস (Classification):
  • জীবদের গঠন, প্রজনন, এবং বিবর্তনীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা। 
  • উদাহরণ: মানুষ, বানর, এবং গরিলা প্রাইমেট (Primates) বর্গের অন্তর্গত।

কার্ল লিনিয়াস এবং দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি

কার্ল লিনিয়াস (Carl Linnaeus) ট্যাক্সোনমির জনক। তার উদ্ভাবিত দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে জীবদের নামকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলী:

দ্বিপদ নামকরণ একটি বৈজ্ঞানিক নামকরণের পদ্ধতি, যা জীবদের সঠিক শ্রেণিবিন্যাস এবং সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়। এটি ICZN (International Code of Zoological Nomenclature) এবং ICBN (International Code of Botanical Nomenclature)-এর নির্দেশিকা অনুসারে পরিচালিত হয়। এই নিয়মাবলী জীবজগতের সকল প্রাণী ও উদ্ভিদের নামকরণের জন্য বিশ্বব্যাপী মেনে চলা হয়।

নামকরণের দুটি প্রধান অংশ:

গণের নাম (Genus):
  • এটি জীবের একক বা গোষ্ঠীকে নির্দেশ করে।
  • প্রথম শব্দটি জীবের গণ নির্দেশ করে এবং এটি বড় হাতের অক্ষরে লেখা হয়।
প্রজাতির নাম (Species):
    • এটি জীবের বিশেষ প্রজাতিকে নির্দেশ করে।
    • দ্বিতীয় শব্দটি জীবের প্রজাতি নির্দেশ করে এবং এটি ছোট হাতের অক্ষরে লেখা হয়।

নামকরণের নিয়মাবলী:

ল্যাটিন ভাষায় নামকরণ:
  • বৈজ্ঞানিক নাম সাধারণত ল্যাটিন ভাষায় অথবা ল্যাটিন রূপে লেখা হয়, কারণ ল্যাটিন ভাষা বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে সর্বজনীন।
  • নামটি ইটালিক করতে হবে, এবং হাতে লিখলে তা আন্ডারলাইন করতে হবে।
নামের দুটি অংশ:
  • নামের প্রথম অংশ (গণের নাম) বড় হাতের অক্ষরে শুরু হয়, আর দ্বিতীয় অংশ (প্রজাতির নাম) ছোট হাতের অক্ষরে লেখা হয়।
  • উদাহরণ: Panthera leo (সিংহ)
একই নামের ব্যবহার:
  • একই জীবের জন্য দুটি ভিন্ন নাম ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম অনন্য হতে হবে।
  • যদি একটি জীবের জন্য একটি নাম প্রস্তাব করা হয়, তবে সেই নামকে বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে।
আবিষ্কারক এবং বৈশিষ্ট্য:
  • নামকরণের সময় জীবের আবিষ্কারক অথবা জীবের বৈশিষ্ট্যও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
  • উদাহরণ: Rana tigrina (ব্যাঙ)।

নামকরণের প্রক্রিয়া:

    • জীবের নতুন নাম প্রস্তাব করলে তা অবশ্যই বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করতে হবে এবং যথাযথ কাগজপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে তা অনুমোদিত হতে হবে।
উদাহরণ:
  • মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম: Homo sapiens
  • গরুর বৈজ্ঞানিক নাম: Bos taurus
  • বিড়ালের বৈজ্ঞানিক নাম: Felis catus

জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাসের স্তরসমূহ (Taxonomic Hierarchy)

  • রাজ্য (Kingdom): এটি শ্রেণিবিন্যাসের সর্বোচ্চ স্তর। উদাহরণ: Animalia (প্রাণীজগৎ)।
  • পর্ব (Phylum) বা বিভাগ (Division): রাজ্যের পরবর্তী স্তর। উদাহরণ: Chordata (মেরুদণ্ডী প্রাণী)।
  • শ্রেণি (Class): পর্বের অধীনস্ত। উদাহরণ: Mammalia (স্তন্যপায়ী)।
  • বর্গ (Order): শ্রেণির অধীনস্ত। উদাহরণ: Primates (বানর, মানুষ)।
  • কুল বা গোত্র (Family): বর্গের অধীনস্ত। উদাহরণ: Hominidae (মানুষ এবং তার নিকট আত্মীয়)।
  • গণ (Genus): কুলের অধীনস্ত। উদাহরণ: Homo (মানুষ)।
  • প্রজাতি (Species): সবচেয়ে ছোট স্তর। উদাহরণ: sapiens (মানুষ)।

মানুষের শ্রেণিবিন্যাসের উদাহরণ:

  • রাজ্য: Animalia
  • পর্ব: Chordata
  • শ্রেণি: Mammalia
  • বর্গ: Primates
  • কুল: Hominidae
  • গণ: Homo
  • প্রজাতি: sapiens

পাঁচ রাজ্যের শ্রেণিবিন্যাস (Five Kingdom Classification)

R.H. Whittaker জীবজগতকে ৫টি রাজ্যে ভাগ করেছেন:
মনেরা (Monera):
  • এককোষী এবং নিউক্লিয়াসবিহীন জীব।
  • উদাহরণ: ব্যাকটেরিয়া।
প্রটিস্টা (Protista):
  • এককোষী এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত জীব।
  • উদাহরণ: অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম।
ফাঙ্গি (Fungi):
  • এককোষী বা বহুকোষী জীব, যাদের কোষপ্রাচীর থাকে এবং যারা পচনশীল জৈব পদার্থ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।
  • উদাহরণ: মাশরুম।
প্লান্টি (Plantae):
  • বহুকোষী জীব, যারা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে খাদ্য প্রস্তুত করে।
  • উদাহরণ: আমগাছ, ধানগাছ।
অ্যানিমেলিয়া (Animalia):
  • বহুকোষী এবং চলনক্ষম প্রাণী।
  • উদাহরণ: মানুষ, বাঘ।
অতিরিক্ত উদাহরণ:
  • পেঁপে গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Carica papaya
  • হাতির বৈজ্ঞানিক নাম: Elephas maximus
  • ধান গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Oryza sativa
  • মেঘরাজ হাঁসের বৈজ্ঞানিক নাম: Anas platyrhynchos
উপসংহার:
ট্যাক্সোনমি জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাস এবং বৈচিত্র্য বোঝার একটি অপরিহার্য বিজ্ঞান। এটি জীবদের সনাক্তকরণ, নামকরণ এবং শ্রেণিবিন্যাসে সুসংগঠিত কাঠামো প্রদান করে।
কেমন লাগলো আমাদের নোটস? জানাতে ভুলো না যেনো! নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখো। মনে রেখো: "প্রথম পদক্ষেপই তোমার সাফল্যের দিক নির্দেশ করে। আজ শুরু করো, কাল তুমি নিশ্চিত জিতবে!"
Best Wishes,
Sciencecoat Team 🎉
Regards, Copyright@sciencecoat

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.